অনলাইনে প্রতারণার ফাঁদ! কীভাবে বাঁচবেন এসব ফাঁদ থেকে?

প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়ে দেশে সহজসরল মানুষের সর্বস্বান্ত হওয়ার নজির নতুন নয়। নিকট অতীতেও নানা উপায়ে প্রতারকচক্র সাধারণ মানুষের কষ্টার্জিত অর্থ হাতিয়ে নিয়ে হাওয়া হয়ে গেছে। যুবক, ডেসটিনি কিংবা ইভ্যালির মতো ঘটনা সংবাদমাধ্যমের কল্যাণে আলোচিত হলেও কিছু মানুষ বারবার একই পথে হাঁটেন।

Sep 19, 2023 - 12:29
 0  16
অনলাইনে প্রতারণার ফাঁদ! কীভাবে বাঁচবেন এসব ফাঁদ থেকে?

প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়ে দেশে সহজসরল মানুষের সর্বস্বান্ত হওয়ার নজির নতুন নয়। নিকট অতীতেও নানা উপায়ে প্রতারকচক্র সাধারণ মানুষের কষ্টার্জিত অর্থ হাতিয়ে নিয়ে হাওয়া হয়ে গেছে। যুবক, ডেসটিনি কিংবা ইভ্যালির মতো ঘটনা সংবাদমাধ্যমের কল্যাণে আলোচিত হলেও কিছু মানুষ বারবার একই পথে হাঁটেন।

প্রতারকেরা ধাপে ধাপে আস্থা অর্জন করে। এমনভাবে ফাঁদ সাজায় যে তাতে পা দিয়ে ফেলেন অনেকেই। ওয়েবসাইট, ট্র্যাকিং নম্বর, অনলাইন লোকেশন, হেল্পলাইন—এসব তৈরিই থাকে। তাই স্বাভাবিকভাবেই মানুষ বিশ্বাস করে। প্রতারকেরা সব সময় জরুরি অবস্থার সৃষ্টি করে এবং দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে বলে। লোভের বশবর্তী হয়ে দ্রুত কোনো সিদ্ধান্ত নেবেন না। টাকা বিনিয়োগ করার আগে সময় নিন।

ছাত্রছাত্রী পড়িয়ে নিজের পড়াশোনার খরচ চালাতেন ঢাকা কলেজের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী আবু তালহা। গত বছরের অক্টোবরে তাঁর হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে একটি লিংক আসে। সেই লিংকে ঢুকে একটি বিজ্ঞাপন দেখতে পান তিনি। চটকদার সেই বিজ্ঞাপনে বলা ছিল, ‘বরগাটা’ নামের একটি অ্যাপ নামিয়ে সেখানে ১০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে দৈনিক ৮০০ থেকে ৫ হাজার টাকা আয় করুন।’ বিজ্ঞাপনটি দেখে ধাপে ধাপে এক লাখ টাকা বিনিয়োগ করেন তালহা। এর তিন মাস পর টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যায় অ্যাপভিত্তিক ওই প্রতিষ্ঠান।

দেশে অর্থ এবং সাইবার সিকিউরিটিসংশ্লিষ্ট যেসব প্রতিষ্ঠান রয়েছে, তাদের অবিলম্বে এ ব্যাপারে অনুসন্ধান চালানো এবং আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি হয়ে পড়েছে। পরিতাপের বিষয় হচ্ছে, ‘তিন পাত্তি’ অ্যাপ থেকে শুরু করে এমটিএফই-এর কার্যকলাপ যখন তাদের গোচরে আসে, ততক্ষণে কোটি কোটি টাকা প্রতারকচক্র হাতিয়ে নিয়ে যায়।

আশার কথা, ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগের নামে গ্রাহকরা হাজার হাজার কোটি টাকা হারানোর পর ঘটনার অনুসন্ধান শুরু করেছে পুলিশের একাধিক ইউনিট। রোববার থেকে এমটিএফই-এর প্রতারণা নিয়ে কাজ শুরু করা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ইতোমধ্যে ঘটনার আদ্যোপান্ত সংগ্রহের কাজ শুরু করেছে। অ্যাপটির মাধ্যমে কীভাবে অর্থ লোপাট হলো, এর সঙ্গে বাংলাদেশের কোন পর্যায়ের কারা জড়িত, তা জানার চেষ্টা করা হচ্ছে।

এছাড়া শহরকেন্দ্রিক ও প্রান্তিক পর্যায়ের ভুক্তভোগীদের কীভাবে প্রলুব্ধ করে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে, তাও বের করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে হতাশার কথা হলো, অতীতে তদন্তের মাধ্যমে প্রতারকদের সম্পর্কে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ এবং আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হলেও প্রতারিত মানুষ তাদের খোয়া যাওয়া অর্থ ফেরত পাননি।

দেশে সাইবার নিরাপত্তার জন্য কাজ করা সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে আসলে ‘ডাক্তার আসিবার পূর্বে রোগী মরিয়া গেল’ নীতিতে নয়, বরং উলটো নীতিতেই হাঁটতে হবে। শুধু সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে নজরদারি নয়, এসব সংস্থাকে দেশে অবৈধ ট্রেডিং ও বেটিং পরিচালনার তথ্য সংগ্রহ এবং প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণে বেশি মনোযোগী হতে হবে।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow