নতুন জাতীয়তাবাদের পথে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান

সৌদি আরব একটি জাতীয়তাবাদী রূপান্তরের পথে হাঁটছে। গত ২৩ সেপ্টেম্বর দেশটির এ বছরের জাতীয় দিবসে সারা দেশের মানুষ; বিশেষ করে সৌদি জনসাধারণের মধ্যকার সংখ্যাগুরু তরুণেরা রাজপথে জাতীয় পতাকা ওড়াতে ওড়াতে গাড়ি চালিয়ে উল্লাস করেছেন। তঁারা সৌদির সামরিক মহড়ায় দলে দলে যোগ দিয়ে আনন্দে মেতেছেন। সৌদির কার্যত নির্বাহী প্রধান ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের উদ্যোগে, বিশেষ করে তরুণ সম্প্রদায়ের মধ্যে যে দেশাত্মবোধ চেতনার উন্মেষ ঘটছে, তার পেছনে মূলত দেশটির সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংস্কারের উদ্দীপনা কাজ করছে।

Oct 4, 2023 - 12:32
 0  26
নতুন জাতীয়তাবাদের পথে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান

সৌদি আরব একটি জাতীয়তাবাদী রূপান্তরের পথে হাঁটছে। গত ২৩ সেপ্টেম্বর দেশটির এ বছরের জাতীয় দিবসে সারা দেশের মানুষ; বিশেষ করে সৌদি জনসাধারণের মধ্যকার সংখ্যাগুরু তরুণেরা রাজপথে জাতীয় পতাকা ওড়াতে ওড়াতে গাড়ি চালিয়ে উল্লাস করেছেন। তঁারা সৌদির সামরিক মহড়ায় দলে দলে যোগ দিয়ে আনন্দে মেতেছেন। 

সৌদির কার্যত নির্বাহী প্রধান ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের উদ্যোগে, বিশেষ করে তরুণ সম্প্রদায়ের মধ্যে যে দেশাত্মবোধ চেতনার উন্মেষ ঘটছে, তার পেছনে মূলত দেশটির সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংস্কারের উদ্দীপনা কাজ করছে।

২০১৮ সাল থেকে সৌদি আরবের নারীরা গাড়ি চালাবার অধিকার পাচ্ছেন।নারীর ক্ষমতায়নের জন্য ইতোমধ্যে ১৯৮০ সালে দেশটিতে চালু থাকা সিনেমা হলগুলি বন্ধ করে দেয়া হয়।সেই সিনেমা হলগুলো খুলে দেওয়া হচ্ছে। এমনকি সৌদি আরব স্পেনের মতো ষাঁড় দৌড়ের আয়োজন করতে চায়।পবিত্র নগরী মক্কা এবং মদিনাতে অমুসলিম প্রবেশে যে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে তা তুলে নেয়া। এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসাবেই কিছুদিন আগে একজন ইহুদী পর্যটককে মসজিদে নববীতে প্রবেশ করতে দেয়া হয়েছে, যেখান থেকে তিনি সেলফি তুলে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে পাঠিয়েছিলেন। 

এ ছাড়া সালমান চাচ্ছেন মক্কা নগরীকে ধর্মীয় নগরের পাশাপাশি বানিজ্যিক নগরী হিসাবেও গড়ে তুলতে।

দেশের ভেতরের সংস্কারমূলক কাজের অংশ হিসেবে রাজপরিবারের হাতে, বিশেষ করে মোহাম্মদ বিন সালমানের হাতে সব ক্ষমতা কার্যকরভাবে কেন্দ্রীভূত করা হচ্ছে। পাশাপাশি ভিন্নমতাবলম্বীদের, বিশেষ করে বিকল্প রাজনৈতিক মডেল চালুর পক্ষে প্রচার চালানো ইসলামপন্থীদের কঠোর হাতে দমন করা হচ্ছে। এ ছাড়া সৌদি সরকারের ভাষ্যের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে সরকার সৌদির ইতিহাস পুনর্লিখনে মনোযোগী হয়েছে। এ ক্ষেত্রে স্কুলের পাঠ্যক্রমেও পরিবর্তন আনা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক খেলাধুলায়ও (বিশেষ করে গলফ ও ফুটবল) বিশাল অঙ্কের বিনিয়োগ করছে। দীর্ঘমেয়াদি প্রয়োজনের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তারা তেল উৎপাদন নীতি গ্রহণ করছে। 

মোহাম্মদ বিন সালমানের সংস্কার কার্যক্রমের মূল বিষয় হলো সৌদি আরবকে একচেটিয়াভাবে তেলভিত্তিক অর্থনীতি থেকে বের করে এনে সেটিকে একটি বৈচিত্র্যপূর্ণ অর্থনীতির ধারায় নিয়ে আসা। এই লক্ষ্যে সরকার ইতিমধ্যে কয়েকটি কথিত ‘গিগা প্রজেক্ট’ চালু করেছে। উদাহরণ হিসেবে লোহিত সাগরের কাছে বিশাল ব্যয়ে নির্মিতব্য কার্বন নিরপেক্ষ শহর নিওম-এর কথা বলা যেতে পারে।  

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow